রংপুরের কানুনগো মোঃ আবুল কালাম আজাদ নামে ঘুষ বানিজ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে

প্রতিবাদী জনতার চাপের মুখে ঘুষের টাকা ফেরত দেন উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার সাবিনা ইয়াজমিন। গতকাল সকালে উপজেলা ভুমি অফিসে এ ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়,উপজেলার ১টি পৌরসভা সহ ১০টি ইউনিয়নের জনসাধারণ জমি সংক্রান্ত কাজে উপজেলা ভুমি অফিসে আসেন। তাদের মধ্যে সহজ সরল কৃষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে ও দুই এক দিনের মধ্যে কাজ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টেবিল প্রতি ৫হাজার থেকে ৩০হাজার টাকা দিতে হবে কারণ টাকা টা কানুনগো মোঃ আবুল কালাম আজাদ কে দিয়ে কাজ টা করাতে হবে এমন কথা বলে টাকা নেন দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও কর্মচারী। ঘুষ নেওয়ার আগে বলেছিলেন মাসের পর মাস ভুমি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পিছেনে ধর্না দেন ভুক্তভুগীরা। এমতাবস্থায় অতিষ্ঠ হয়ে এসিল্যান্ডটের কাছে ভুক্তভোগীদের কেউ অভিযোগ করতে চাইলেও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের পালিত সন্ত্রাসী ও দালাল চক্রের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না। ভুমি অফিসের ঘুষখোর কর্মকর্তাদের হাতে জিম্মি নিরিহ জনসাধারণ। নাম গোপন রাখার শর্তে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ বিষয়ে গতকাল সকালে সরেজমিনে উপজেলা ভুমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, সার্ভেয়ার সাবিনা ইয়াসমিনের অফিস কক্ষে তার সাথে সাহেবগঞ্জ এলাকার বাবুল মন্ডল নামে একজন সাধারন কৃষকের তর্কবিতর্ক চলছে। উপজেলা ভুমি সার্ভেয়ার কর্মকর্তা শাসিয়ে ওই কৃষককে বলছেন,উপজেলার সব নেতা আমার হাতের মুঠোয়, আপনার কি করার আছে করেন,টাকা ফেরত দিতে পারবোনা। এ সময় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তার কক্ষে প্রবেশ করার পর তিনি জড়োসড়ো বয়ে বসেন। কি নিয়ে তর্ক প্রশ্ন করলে ভুক্তভোগী কৃষক বাবলু মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন,নামজারি কাজে তিনি কানুনগো মোঃ আবুল কালাম আজাদ কে দিয়ে কাজ টা করালে দ্রুত কাজটা হয়ে যাবে এমন কথা বলছেন কিন্তু এখন তো বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৩০হাজার টাকা নিয়েও কাজ করে দেননি। অথর্চ্য নামজারি বাবদ সরকারি ফ্রি ১১৭০টাকা নির্ধারিত থাকার পর কেন এতো টাকা নেওয়া হয়েছে জিজ্ঞেসা করলে সার্ভেয়ার কোন উত্তর দিতে পারেনি। এক পর্যায়ে সাভেয়ার ঘুষ নেওয়ার কথা শিকার করে এবং বলেন টাকা কি আমি নিয়েছি টাকা টা কানুনগো মোঃ আবুল কালাম আজাদ কে দিয়েছি কাজ টা করে দেওয়ার জন্য কিছু টাকা আমি নিজেও রেখেছি এবং চাপের মুখে তিনি ভুক্তভোগী কে ৩০ হাজারের মধ্যে নগত ৪হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বাকী টাকা পরিশোধের সময় নেন। এ খবর পৌর শহরে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন এলাকা থেকে ভুক্তভুগিরা ভুমি অফিসে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় সার্ভেয়ার সাবিনার মতো ভুমি অফিসের অন্যঅন্য ঘুষখোর কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ভুক্তভুগীদের ভয়ে সটকে পড়েন। ভুমি অফিসে শতশত মানুষের কাছ থেকে কানুনগো কথা বলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভুগিদের মধ্যে স্বপন চন্দ্র বলেন,মিস কেস বাবদ তার কাছ থেকে ৩হাজার টাকা নিয়েছেন,। ফেরদৌস রহমান সাজু বলেন,এসিল্যান্ড ছাড়া ওই অফিসের সব দুর্নীতিবাজ। ,মাইদুল ইসলাম বলেন,পুরো অফিসটাই দুর্নীতির আখড়া,। রেজাউল শাহ বলেন, আমার মিসকেস ২১/১৮-১৯ তিন বছর ধরে ঘুরতেছি টাকা দেই না বলে কাজ হয় না । মনির শাহ ফিরোজ বলেন,ওই ভদ্রমহিলা ঘুষ নেওয়ার পরও জনসাধারণের সঙ্গে প্রায় খারাপ আচরণ করেন। ঘুষ নেওয়ার প্রসঙ্গে উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার সাবিনা ইয়াসমিন তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মির্থ্যা বলে দাবী করে তিনি বলেন, একটা সমস্যা হয়েছিল টাকা ফেরত দিয়েছি আর কেউ আমার সামনে দাড়িয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কথা বলতে পারবে না। আগামীকাল শুক্রবার আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দিবস পালিত হবে। দুর্নীতি দিবসের মাস ডিসেম্বর মাস। এ উপলক্ষে জেলা ও বিভাগ সহ উপজেলা পর্যায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী দপ্তরের সরেজমিনে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হবে। আজ দুর্নীতির পর্ব এক প্রকাশিত হয়েছে। এদিকে বদরগঞ্জ উপজেলা ভুমি অফিসের এসিল্যান্ড চিকিৎসার কাজে দেশের বাহিরে থাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদকে জিজ্ঞেসা করা হলে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে হয়রানী ও অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন