
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রাইভেট কারের চাপায় পুলিশের চেকপোস্টে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে; গুরুতর আহত হয়েছেন তার দুই সহপাঠী।
পুলিশ বলছে, প্রাইভেট কারটি সাবেক এক সেনা কর্মকর্তার, চালাচ্ছিলেন তার ছেলে।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের ৩০০ ফুট সড়কে (কুড়িল-কাঞ্চন সড়ক) এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (‘গ’ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম।
নিহত মুহতাসিম মাসুদ (২২) বুয়েটের সিএসই ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার মাসুদ মিয়ার ছেলে।
আহত মেহেদী হাসান খান (২২) কুমিল্লা সদরের মফিজুর রহমান খানের ছেলে এবং অমিত সাহা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার তপন কুমার সাহার ছেলে। তারা দুজনও একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
চেকপোস্টটি রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ছিল বলে জানিয়েছেন ওই থানার ওসি লিয়াকত আলী।
তিনি বলেন, “পূর্বাচল এলাকায় ঘন ঘন অপরাধ কার্যক্রম হচ্ছিলো। এ কারণে গত দুই সপ্তাহ ধরে ৩০০ ফুট সড়কের ওই জায়গায় চেকপোস্ট স্থাপন করে পুলিশ। এবং চেকপোস্টের বিষয়ে নির্দিষ্ট দূরত্বে সংকতও ছিল।”
পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদী জানান, গাড়ি চাপায় হতাহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার ও প্রাইভেট কারটি জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মুবিন আল মামুন (২০), তার বন্ধু মো. মিরাজুল করিম (২২) ও আসিফ চৌধুরী।
প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলেন মুবিন আল মামুন, তিনি সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছেলে। গাড়িটির রেজিস্ট্রেশনও সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তার নামে।
শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ আদালত চত্বরে কথা হয় সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সকাল বেলা কে । বলেন, তার ছেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে তিনি আর কিছু বলতে চাননি।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মাসুদ মিয়া সড়ক পরিবহন আইনে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন বুয়েটছাত্র মুহতাসিম মাসুদ। পরে তার দুই বন্ধুসহ ৩০০ ফুট সড়কে বেড়াতে যান।
সেখানে নীলা মার্কেটে তারা রাতের খাবার খান। ভোররাত আনুমানিক ৩টার দিকে বাসায় ফেরার সময় নীলা মার্কেটের অদূরে একটি পুলিশ চেকপোস্টে তাদের থামানো হয়।
ওই সময় বেপরোয়া গতির একটি গাড়ি চেকপোস্ট অতিক্রম করে বুয়েট ছাত্রদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মুহতাসিম মাসুদ৷ আহত হন বাকি দুজন।
মেহেদীকে স্কয়ার হাসপাতালে এবং অমিত সাহাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পর প্রাইভেট কার তল্লাশি করে এক ক্যান বিয়ার ও একটি খালি মদের বোতল পাওয়ার কথা বলা হয়েছে মামলার এজাহারে।
জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, “গ্রেপ্তার তিনজনকে ডোপ টেস্টের জন্য পাঠানো হচ্ছে।”
মুহতাসিম মাসুদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।