বরগুনা জেলা রেজিস্ট্রার স্বদেশ চন্দ্র চন্দ এর বিরুদ্ধে ঘুষ আর দুর্নীতি অভিযোগ

বরগুনা সাব রেজিস্টার অফিস ঘিরে কোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য!
সাব রেজিস্টার অফিসের পরতে পরতে দুর্নীতি। ঘুষ ছাড়া কোনো একটি কাজ স্বপ্নের সমান। দলিল রেজিস্ট্রি করতে সরকারি রাজস্বের বাইরে দলিল প্রতি ১৫’শ থেকে ৩৫’শ টাকা, সর্বনিম্ন ২শতাংশ হারে কমিশন না দিলে কোনো দলিল রেজিস্টার হয় না। এছাড়া হায়ার ভ্যালু, হেবা ঘোষণাতেও নেওয়া হচ্ছে বাড়তি মোটা অঙ্কের টাকা।
অভিযোগ রয়েছে, জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে উচ্চমানের জমিকে নিম্নমানের উল্লেখ করে দলিল সম্পাদন করার। যা উদ্দেশ্য সরকারের বিশাল অঙ্কের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া। জমির শ্রেণি পরিবর্তনে সরকারের বিশাল রাজস্ব ফাঁকি দিলেও সাব-রেজিস্টার ও সংশ্লিষ্টরা হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এ ছাড়াও রয়েছে কথিত সেরেস্তার নামে টাকা আদায় এবং পদে পদে হয়রানি ও ঘুষ বাণিজ্যের ম্যারাথন অভিযোগ। এবং জেলা রেজিস্ট্রার স্বদেশ চন্দ্র চন্দ নামের উপরে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকার ঘুষ
এসব ঘুষের টাকা প্রতিটি দলিল লেখককে সরকারি ফিসের সঙ্গে হিসাব করে আলাদা বুঝিয়ে দিতে হয় জেলা রেজিস্টার অফিসের অফিস সহকারী কিশোর কুমার বড়াল কে এরপর আরও কয়েক হাত ঘুরে সে টাকা যায় জেলা রেজিস্টার স্বদেশ
চন্দ্র চন্দ এর হাতে যায়
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখক জানান, আমরা এখানে অসহায়, আমদের কিছু করার নাই। আমরা যদি দলিল প্রতি নির্ধারিত অতিরিক্ত টাকা হিসাব করে বুঝিয়ে না দেই। তবে তো দলিলই গ্রহণ করবে না, সাইনতো দূরের কথা।
ঘুষের আদায়কৃত অর্থ সাব-রেজিস্টার, তার সহকারী কিশোর কুমার বড়াল এবং দালালদের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর নির্ধারিত হারে ভাগ করা হয়। অতিরিক্ত টাকা ছাড়া কোনো একটি দলিল নিবন্ধন হয়েছে এমন উদাহরণ নেই বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভূমি রেজিস্ট্রি কার্যক্রমে সরকার নির্ধারিত হারে আয়কর ও রেজিস্ট্রেশন ফি পেয়ে থাকে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রতিটি দলিল রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রে দলিলদাতা ও গ্রহীতাকে ঘুষ বাবদ বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জমি বিক্রেতা জানান, জমি বিক্রি করে দলিল রেজিস্ট্রি করতে তাদের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে আয়কর ও ভ্যাটের পাশাপাশি আরও ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়। ঘুষের এ টাকা ছাড়া জমির দলির সম্পাদিত হয় না। টাকা না দিলে দলিল রেজিস্ট্রি করতে সাব-রেজিস্টার কার্যালয়ের লোকজন হয়রানি করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবক জানান, তিনি গত এক বছরে কমপক্ষে ৫০টি দলিল করিয়েছেন। এ-সব দলিল প্রতি সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অফিস খরচ বাবদ অতিরিক্ত টাকা দিয়েছেন।
তিনি জানান, আমি অনেকবার তাদের কাছে জানতে চেয়েছি, ঝগড়াও করেছি, অফিস খরচ দেওয়া নিয়ে। কিন্তু কোনো উপায় না পেয়ে টাকা দিতেই হয়েছে। কারণ, অফিস খরচ নামের ঘুষের এই টাকা ছাড়া দলিল রেজিস্ট্রি হবে না। বলে জানিয়ে দিয়েছে অফিস সহকারী কিশোর কুমার বড়াল এবং আরও
জানতে চাইলে সাব রেজিস্টার প্রথমে অফিস খরচ নামে দলিল প্রতি অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করে বলেন, এখানে সরকারি ফিসের বাহিরে কোনো ধরনের অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয় না।
আমাদের কাছে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অসংখ্য প্রমাণ আছে দাবি করে ফের জানতে চাইলে, এক পর্যায়ে সাব রেজিস্টার বলেন, দলিল প্রতি অতিরিক্ত ৫ থেকে ৬’শ টাকা বিভিন্ন খরচ বাবদ সরকারি ফিসের বাহিরে নেওয়ার বিধান আছে। আমরা সেই টাকাই নিয়ে থাকি, এর বাহিরে আমরা কোনো টাকা নেয় না।
আপনার মতামত লিখুন